Online Bangla feature and news portal
২৫শে জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

পন্টিং, গিলক্রিস্টের পর রেকর্ড এখন হিলির

আপডেট : এপ্রিল ৩, ২০২২ ২:০৮ অপরাহ্ণ

51

ভয়েস বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলছেন না মিচেল স্টার্ক। অস্ট্রেলিয়ার অনেক তারকাই সে পথে হেঁটেছেন। আইপিএল খেলার জন্য বিশ্রাম পেয়েছেন জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও ডেভিড ওয়ার্নার। তবে মিচেল স্টার্ক আইপিএলও খেলছেন না। বেশ কয়েক বছর ধরেই নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তরতাজা রাখতে আইপিএলের নিলামে নাম দিচ্ছেন না স্টার্ক।

অবশ্য আইপিএলে খেললে কিংবা পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে থাকলেও গতকালের ম্যাচে স্টার্ককে নির্ঘাত পাওয়া যেত না। কারণ, আজ মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে নেমেছিলেন তাঁর স্ত্রী অ্যালিসা হিলি। এই ম্যাচে গ্যালারি থাকবেন না, তা কি হয়? মাঠেই ছিলেন স্টার্ক, আর সে সুবাদে দুর্দান্ত এক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে গেলেন। ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট মিলিয়েই বিশ্বকাপের ফাইনালের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড গড়েছেন হিলি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ১৭০ রানের এক ইনিংস খেলেছেন ইয়ান হিলির ভ্রাতৃকন্যা।

আজ হিলির শতকের পরই ক্যামেরা সঙ্গে সঙ্গে খুঁজে নিয়েছে মিচেল স্টার্ককে। বিশ্বকাপ ফাইনালে স্ত্রীকে ভালো করতে দেখার অভিজ্ঞতা অবশ্য নতুন নয় তাঁর। ২০২০ সালে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখার জন্য জাতীয় দলের খেলা থেকে ছুটি নিয়েছিলেন স্টার্ক। মেলবোর্নে সেদিন ৩৯ বলে ৭৫ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন হিলি।

আজ ক্রাইস্টচার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঝড় তুলেছিলেন হিলি। টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তটা যে ইংল্যান্ডের ভুল ছিল, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন সঙ্গী রাচেল হেয়নেসকে নিয়ে। শুরুটা বেশ ধীর ছিল। প্রথম ১০ ওভারে এসেছিল মাত্র ৩৭ রান। ৫০ ছুতে ছুতে ১২.১ ওভার। কিন্তু এরপর বেড়েছে রানের গতি। জুটির পরে ৫০ এসেছে ৫৫ বলে।

বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ দুই রান সংগ্রাহক হিলি ও হেয়নেস দুজনই ৫০ পেরিয়েছেন ২৫ ওভারের মধ্যে। ৫০ ছোঁয়ার পথে দুজনেরই ছিল ৬টি বাউন্ডারি। তখনো বোঝা যায়নি কী অপেক্ষা করছে ইংল্যান্ডের জন্য। ৫০ পেরোনোর পরই গিয়ার বদলেছেন হিলি। নিজের স্বাভাবিক আক্রমণাত্মক রূপে দেখা দিয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

৩০তম ওভারে দলকে ১৬০ রানে রেখে ফিরলেন হেয়নেস (৬৮)। এতে বিপদ আরও বেড়েছে ইংল্যান্ডের। এতক্ষণ শুধু হিলি আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। এবার বেথ মুনিও যোগ দিলেন। নিজের দ্বিতীয় ৫০ মাত্র ৩৮ বলে পেয়েছেন হিলি, এবার ছিল ৭টি চার।

৩৬তম ওভারে ২০০ পেরোয় অস্ট্রেলিয়া। হিলি তখন ছুটছেন। যখন প্রয়োজন হয়েছে দৌড়ে রান নিয়েছেন বটে। তবে ইনিংসের এই পর্যায়ে এসে বাউন্ডারিতেই নজর ছিল তাঁর। শতকের পরের ২৯ বলের মধ্যে ৯টিই ছিল চার। আর তাতে ১২৯ বলে ১৫০ হয়ে গেছে তাঁর।

মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনাল এর আগে মাত্র একটি শতক দেখেছিল। ২০০৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ১০৭ রানে অপরাজিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ারই ক্যারেন রোল্টন। সে রেকর্ড তো বহু আগেই ভেঙেছেন, ৪৪তম ওভারে হ্যাটট্রিক চারের দ্বিতীয়টিতে যখন ১৫০ পেরোলেন তখন ছেলেদের বিশ্বকাপের রেকর্ডও ভাঙা হয়ে গেল হিলির।

ছেলেদের বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ২৪ বছর ধরে ছিল ভিভ রিচার্ডসের। ২০০৩ সালে তাঁর অপরাজিত ১৩৮ কে পেছনে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং। তাঁর অপরাজিত ১৪০ রানের রেকর্ড টিকেছিল মাত্র ৪ বছর। ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনালেই ১০৪ বলে ১৪৯ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

হিলি আজ যেভাবে ছুটছিলেন তাতে বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথম দ্বিশতকের দেখাও মিলতে পারত। মাঝে টানা দুই ওভারে চারটি করে চার মেরেছেন হিলি ও মুনি। ৪৫ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ১ উইকেটে ৩১৫, হিলির রান তখন ১৭০। পরের ওভারেই আউট হয়ে যান হিলি। ১৩৮ বলের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ২৬টি চার মেরেছেন হিলি। একটু পর বেথ মুনিও ৪৭ বলে ৬২ করে ফিরে গেছেন। শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলতে নামা অলরাউন্ডার এলিস পেরি ১০ বলে ১৭ রান করে দলকে ৩৫৬ রান এনে দিয়েছেন।

মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাড়া করে জেতার রেকর্ড ১৬৭, পরে ব্যাট করে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটিও ২১৯। অর্থাৎ আজ অস্ট্রেলিয়ার আরেকটি বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। আর তা হলে রিকি পন্টিংরা আরও পিছিয়ে পড়বেন। ছেলেদের ক্রিকেটে ওয়ানডেতে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। আজ জিতলে মেয়েদের ক্রিকেটে সপ্তমবারের মতো শিরোপা উৎসব করবে অস্ট্রেলিয়া।

সূত্র: প্রথম আলো




স্মৃতি ও স্মরণ

ছবি