ভয়েস বাংলা ডেস্ক
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই কার পার্কিং বানাতে হবে? এখানেই ওয়াকওয়ে আর রেস্টুরেন্ট বানাতে হবে? এসব প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে গণমাধ্যমে উন্নয়নের ব্যাখা পাঠিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেখানে উদ্যাণে কী কী করা হবে সেগুলো বলা আছে। অথচ শিখা চিরন্তনসহ অধিকাংশ কাজই হয়ে গেছে। তাহলে নতুন করে গাছ কাটা হচ্ছে কেন? আর গাছ না কেটে কী এসব কাজ করা সম্ভব নয়?
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে দেখছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যাণে ৫০০ গাড়ীর জন্য কার পার্কিংও হবে। আচ্ছা পৃথিবীর কোন দেশে উদ্যানের গাছ কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান করা হয় কেউ জানেন? এছাড়া উদ্যানের ভেতরে গাছ কেটে এরই মধ্যে রেস্টরেন্ট বানানোর কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। স্বাধীনতা স্মারক প্রকল্পের মধ্যে রেস্টরেন্ট কিভাবে এলো তা মুক্তিযুদ্ধ আর গণপূর্ত মন্ত্রানালয়ই ভাল বলতে পারবে।
বিষয়টা খুবই দুঃখজনক যে গাছ কাটার জন্য মন্ত্রনালয়গুলো এখন স্বাধীনতা স্মারক নির্মানের অজুহাত দিচ্ছে! কিন্তু এসব স্থাপনা আগেই নির্মাণ হয়ে গেছে। এখনকার গাছ কাটা হচ্ছে শুধুই রেস্টরেন্ট আর ওয়াকওয়ের জন্য। এই ৫০০ গাড়ির পার্কিং, সাতটা রেস্টুরেন্ট আর ওয়াকওয়ে না করলে সমস্যা কী?
নীতি নির্ধারকদের কাছে অনুরোধ, যা ইচ্ছে করুন। কিন্তু উদ্যানের প্রাকৃতিক পরিবেশ টিকিয়ে রাখুন। গাছ না কেটে উন্নয়ন করুন। কোনভাবেই আমরা গাছ কেটে ওয়াকওয়ে চাই না। এর বদলে গাছের ছায়ায় হাঁটতে চাই। আর এখানে রেস্তোরাঁ চাই না। এর চেয়ে বরং খেতে চাই অক্সিজেন। পার্কিং চাই না। চাই সবুজ অরণ্য।
শেষ করার আগে আপনাদের বহু বছর আগে প্রচারিত বিটিভির একটি পুরনো বিজ্ঞাপন ফিরিয়ে নিয়ে যাই। অভিনেতা ছিলেন আবুল খায়ের। বিজ্ঞাপনটা শুরুটা হয়েছিল আবুল খায়েরের একটি ডায়লগ দিয়ে।
পেশায় কবিরাজ আবুল খায়ের বলছেন, সব গাছ কাইটা ফালাইতাসে। আমি ঔষধ বানামু কি দিয়া? তখন এক লোক এসে আবুল খায়ের কে প্রশ্ন করতে শুরু করে।
-কি গো কবিরাজ, কি খোঁজতাসেন ?
-আইচ্ছা, এইখানে একটা অর্জুন গাছ আছিলো না?
আছিলো, কাইট্টা ফালাইছে।
– এইখানে একটা শিশু গাছ আর ঐ মাথায় একটা হরতকী গাছ।
আছিলো , কাইট্টা ফালাইছি।
-আপনের গাছ ?
হ । টেকার দরকার পড়ছে তাই বিক্রি করছি।
– গাছ লাগাইছিলো কে?
আমার বাবায়।
– আপনি কী লাগাইছেন ?
-আমি কী লাগাইছি ?
হ, ভবিষ্যতে আপনার পোলারও টেকার দরকার হইতে পারে….
আবুল খায়েরের শেষ কথাটি ছিল: “এক একটা গাছ, এক একটা অক্সিজেনের ফ্যাক্টরী।
আমরা বোধহয় টাকার নেশায় আমাদের অক্সিজেন ফ্যাক্টরিগুলো ধ্বংস করার মিশনে নেমেছি। চলুন এই ধ্বংসযজ্ঞ থামাই।
ফেসবুক থেকে