Online Bangla feature and news portal
৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ

পরিদর্শক সোহেল রানা: ভাড়া নিয়ে ছয়তলা বাড়ি ‘দখল’

আপডেট : সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১ ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ

3

ভয়েস বাংলা ডেস্ক

রাজধানীর বনানীতে একটি ছয়তলা বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তিনি। থাকার কথা বলে ভাড়া নিলেও চুক্তি ভঙ্গ করে সেখানে আবাসিক হোটেল বানান তিনি। প্রথম দিকে ভাড়া দিলেও একপর্যায়ে তা বন্ধ করে দেন। মালিক বাড়ি ছাড়তে বললে তাঁকে ভয়ভীতি দেখান।

বনানী থানার বরখাস্ত পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা এভাবে একটি বাড়ি দখল করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত বাড়ি দখলমুক্ত হলেও বাড়ির মালিকের অভিযোগ, সোহেল রানা ভাড়া ও বিভিন্ন বিল বাবদ সাড়ে ৫৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেননি।

গত বৃহস্পতিবার ই-অরেঞ্জের একজন গ্রাহক সোহেল রানার বিরুদ্ধে প্রায় ৮৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই সোহেল রানা পালিয়ে যান। পরে গত শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্দায় সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েন তিনি। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত রবিবার সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

বাড়ির মালিকপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালের এপ্রিলে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা তাঁদের বনানীর ২/২ নম্বর সড়কের এক ইউনিটের ছয়তলা বাড়ি মাসিক সাড়ে চার লাখ টাকায় ভাড়া নেন। কিন্তু বাড়ি ভাড়ার চুক্তি হয় তাঁর (সোহেল রানা) ঘনিষ্ঠ তাজউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তাঁরা শেখ সোহেল রানার সঙ্গে চুক্তিনামা করতে চাইলেও তিনি সরকারি চাকরির অজুহাত দেখিয়ে বলেন, বাড়ি ভাড়া তিনিই দেবেন। সে অনুযায়ী ভাড়ার রসিদ সোহেল রানার নামেই করা হতো।

বাড়িটির মালিক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, সোহেল রানা নিজে থাকার জন্য বাড়ি ভাড়া নিলেও বাড়িটিকে হোটেল বানিয়েছিলেন। তিনি চুক্তিপত্রের অঙ্গীকারনামা ভঙ্গ করে বিভিন্ন তলার অবকাঠামো ভেঙে বিভিন্ন মাপের কক্ষ বানিয়ে নেন।

* ২০১৮ সালের এপ্রিলে বনানীর একটি বাড়ি ভাড়া নেন সোহেল রানা। একপর্যায়ে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন। * বাড়ি দখলমুক্ত হলেও মালিকের অভিযোগ, সোহেল রানা ভাড়া ও বিল বাবদ সাড়ে ৫৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেননি।

বাড়ির মালিকের অভিযোগ, সোহেল রানা প্রথম দিকে বাড়িভাড়া দিলেও একপর্যায়ে বন্ধ করে দেন। ভাড়া চাইতে গেলে সোহেল রানা ‘দেব’, ‘দিচ্ছি’ বলে টালবাহানা করতেন, আর তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। বাড়িটি সোহেল রানার কর্মস্থল বনানী থানা এলাকায় হওয়ায় তাঁরা ভয়ে পেয়ে যান। সোহেল রানার কাছ থেকে বাড়িটি বুঝে নিতে চাইলে তিনি দখল ছাড়েননি। এভাবে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি বাড়িটি দখল করে রাখেন।

ফারজানা শারমিন বলেন, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি বনানী থানায় গিয়ে সোহেল রানাকে বলেন, বাড়ি ছেড়ে না দিলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করবেন। তখন তাঁকে বাড়ির চাবি বুঝিয়ে দেন সোহেল রানা। দুই দিন পর সোহেল রানার লোকজন বাড়ির প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। তখন তিনি পুলিশের গুলশান বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সহযোগিতা চান। তখন একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা চলে যায়।

পুলিশের গুলশান বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বর্তমানে বগুড়ার পুলিশ সুপার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক নারী বাড়িটি উদ্ধারে তাঁর কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। তখন তিনি বাড়িটি পুরোপুরি দখলমুক্ত করার পদক্ষেপ নেন।

সূত্র: প্রথম আলো




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ছবি